নেপাল ভ্রমণ - ২য় পর্ব
সকালটা এত সুন্দর, মিষ্টি একটা
রূপ নিয়ে হাজির হবে কল্পনাও করিনি। একপাশে লেইক, তার ওপর উঁচু পাহাড়ের ওপর মেঘের ভেসে
বেড়ানো দেখছিলাম সকালে ওঠে। চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বেলকনিতে বসে পোখারায় সকাল
দেখার একটা স্বর্গীয় সৌন্দর্য আছে। আমরা সে সৌন্দর্যে আপ্লুত হয়ে ঝটপট নাশতা সেরে নিলাম।
এরপর রেডি হলাম পোখারার সাইটসিন করার জন্য। গতকাল রাতেই হোটেলে কথা বলে রেখেছিলাম একটা
ট্যুর অপারেটরের বাসে করে আমরা পোখারা ঘুরে দেখব। ৯ থেকে ১০টা জায়গা তারা সারাদিনে
ঘুরে দেখাবে। জনপ্রতি ৮০০ টাকা করে জায়গাগুলো ঘোরা যাবে।
পোখারা জনসংখার হিসাবে রাজধানী কাঠামান্ডুর
পরে নেপালের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং এটি নেপালের পশ্চিমাংশের গণ্ডকি অঞ্চলের অন্তর্গত
কাস্কি জেলার একটি শহর। শহরটি কাঠমান্ডু থেকে ২০২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। শহরটি পোখরা
উপত্যকায় গড়ে উঠেছে। পোখরা উপত্যকার উত্তর-পশ্চিমপ্রান্তে এর অবস্থান। এই উপত্যকা
দিয়ে শ্বেতগন্ধকি নদী বা সাদা নদী প্রবাহিত হয়েছে। এই শহরটি থেকে ১৫ থেকে ৩৫ কিলোমিটারের
মধ্যেই পর্বতারোহীদের ট্রেকিংয়ের অন্যতম গন্তব্য অন্নপূর্না রেঞ্জ অবস্থিত। বিশ্বের
সর্বোচ্চ দশটি পর্বতশৃঙ্গের মধ্যে তিনটি রয়েছে এই পর্বতমালায়। এগুলো হল- ধবলগিরি,
অন্নপূর্না ১ ও মাকালু। এই শহরে রয়েছে পর্বতারোহনের বেসক্যাম্পও। শহরটির ইতিহাস খুবই
প্রাচীন ও সমৃদ্ধ। এটি চীন ও ভারতের প্রাচীনকালের যোগাযোগের মাধ্যম ছিল। ১৭৮৬ সালে
এখানে শাসন করতেন পৃথ্বিনারায়ন শাহ। এটি গন্ধকি সাম্রাজ্যের অন্তর্গত ছিল।
ডেভিস ফলস পোখারার জনপ্রিয় একটি জলপ্রপাত; ছবিঃ লেখক
আমাদের আগে থেকে বলে দেয়া হয়েছিল সকাল
সাড়ে নয়টার মধ্যে রেডি থাকতে। বাস আসবে আমাদের হোটেলের সামনে। একদম সময়মতোই এলো বাস।
আমরা বেরিয়ে গেলাম। বাসে ওঠে যার যার আসনে বসলাম। বাসে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আসা
যাত্রীতে পূর্ণ। একটা বাসে এ যেন আন্তঃমহাদেশীয় মিলনমেলা! বাস পোখারার লেকসাইড রোড
ধরে ছুটতে থাকলে। সিটি পেরিয়ে পাহাড়ি রাস্তায় উঠে কিছুক্ষণ চলল। এরপর থেমে গেলো। আমাদের
বাসে একজন গাইড ছিলেন, যার নাম আনিতা। উনি হিন্দি ও ইংরেজিতে আমাদের বিভিন্ন নির্দেশনা
দিচ্ছিলেন। প্রথমে আমাদের নিয়ে যাওয়া হলো একসাথে পাশাপাশি দুটো আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্যে।
একটা হলো মহাদেব গুহা ও অন্যটি ডেভিস ফলস বা প্রপাত। আমাদেরক দুটো জায়গা দেখার জন্য
৫০ মিনিট সময় বেঁধে দেয়া হলো। ঠিক ৫০ মিনিট পরেই আমাদের বাসের মধ্যে ফিরে আসতে হবে।
আমরা নির্দেশনাগুলো বুঝে নিয়ে নেমে গেলাম।
মহাদেবের গুহা হলো চুনাপাথরের একটি গুহা।
এটি পরলোকগত রাজা মাহেন্দ্র বীরবিক্রম মাহাদেবের নামে নামকরণ করা হয়েছিল। গুহার প্রবেশপথে
মহাদেবের মূর্তি আছে। এখানে আছেন একজন পুরোহিতও। ধর্মীয়ভাবেও তাই এটি গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা গুহায় ঢুকতেই দেখি ওপর থেকে সাঁ সাঁ পানির শব্দ আসছে। আর পুরো গুহায় ছোট ছোট স্বল্প
আলোর বাল্ব রাখা আছে। কেমন যেন একটা গা ছমছমে পরিবেশ। আমরা গুহাটির শেষ পর্যন্ত গিয়ে
আবার ফিরে এলাম। গুহার ভেতরে ঢুকে একদম আদিম সভ্যতার মধ্যে যেন চলে গেলাম। আর হ্যাঁ,
গুহাতে ঢুকতে এন্ট্রি ফি আছে, ১০০ রুপি করে প্রতিজন।
মহাদেবের গুহা নামে পরিচিত পোখারার এই গুহায় সবসময় একটা গা ছমছমে পরিবেশ থাকে; ছবিঃ লেখক
মাহেন্দ্র গুহা থেকে বের হয়েই আমরা সময়
নষ্ট না করে চলে গেলাম ডেভিস ফলস দেখতে। এটি ছোট একটি জলপ্রপাত হলেও পানির স্রোত বেশ
ভালোই বয়ে চলেছে। মুগ্ধ করার মতো একটি জায়গা। দেবি নামে এক পর্যটক এই ঝর্নার পানিতে
গোসল করতে গিয়ে মারা যান। পরে জায়গাটি রেলিং দিয়ে ঘিরে রাখা হয়, যাতে কেউ পানিতে না
নামতে পারে। দেবি থেকেই ডেভিস ফলস নামকরণ করা হয়। এখানে প্রবেশমূল্য জনপ্রতি ৩০ রুপি।
আমরা কিছুক্ষণ দেখলাম, ছবি ও ভিডিও নিলাম। ফুরফুরে হাওয়া মনকে একদম প্রশান্ত করে দিলো।
বের হতে ইচ্ছে করছিল না এখান থেকে। কিন্তু সময় সীমিত, কিচ্ছু করার নেই। আমরা ফিরছিলাম।
রাস্তার দু’পাশে দেখলাম নানা পণ্যের পসরা। এক দিদি বাংলায় ডাক দিলেন। এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস
করলাম, আপনি বাংলা জানেন? উনি বললেন, ভালোই জানি। বললাম বাড়ি কোথায়? জানালেন, উনি কলকাতার।
আমাকে জিজ্ঞে করলেন। আমি বললাম বাংলাদেশ। উনি শুনে বেশ উৎফুল্ল হলেন একজন বাঙালিকে
দেখে। আমার ইচ্ছে ছিল ওনার দোকানে কিছু দেখব, কেনার চেষ্টা করবো। কিন্তু সময় ছিল না
একদম হাতে!
আবারও আমাদের গাড়ি ছুটে চললো পাহাড়ের
পথ ধরে। এবার নান্দনিক ও দারুণ সব দৃশ্য দেখতে দেখতে যাচ্ছিলাম। এত সুন্দর শহর পোখারা,
না এলে খুব মিস করতাম। এজন্যই বলে, ‘পোখারা না এলে নেপাল ভ্রমণ অসম্পূর্ণ থেকে যায়’।
দীর্ঘ দশঘন্টার কষ্টকর বাসজার্নি করে পোখারা আসাটা সার্থক হয়ে যায় শুধু এর সৌন্দর্য
দেখে।
আমাদের বাস গিয়ে থামল আরেকটি স্পটে।
এটার নাম পুমডিকোট বা শিব স্তুপা। একদম পাহাড়ের ওপরে বিশাল বড় এলাকা নিয়ে জায়গাটা সাজানো
হয়েছে। একদম চূড়ায় বিশাল আকারের একটা শিবমূর্তি রয়েছে; রয়েছে মন্দিরও। পূণ্যার্থীদের
ভীড় তো লেগেই থাকে, সাথে দেশ-বিদেশের অসংখ্য ট্যুরিস্টও। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দেড়হাজার
মিটার উঁচুতে অবস্থিত এবং কৈলাশনাথ মহাদেব স্ট্যাচুর পর নেপালের দ্বিতীয় দীর্ঘতম শিব
স্ট্যাচু। পুরো স্ট্যাচুর কাঠামো ১০৮ ফুট উঁচু। আর এখান থেকে পোখারা উপত্যকা, ফেওয়া
লেইক, শান্তি স্তুপার ভিউ এবং হিমালয়ের একটা অংশ দেখা যায়। যেহেতু জায়গাটা অনেক বড়,
তাই এখানে আমাদের একঘন্টা সময় দেয়া হয়। আমরা একঘন্টায় বেশ ভালো একটি সময় কাটালাম। এরপর
চলে এলাম বাসে।
শিব স্তুপায় বিশাল শিবমূর্তি; ছবিঃ লেখক
এবার আমরা চলে এলাম শান্তি স্তুপা বা
ওয়ার্ল্ড পিস প্যাগোডায়। পাহাড়ের অনেক উঁচুতে এটির অবস্থান। অনেকক্ষণ হাঁটার পর আমরা
চলে গেলাম প্যাগোডার কাছে। গিয়ে দেখলাম একদম নীরব এলাকা। এখানে পিনপতন নীরবতা চলে সবসময়।
কথা বলা নিষেধ। ভিডিওগ্রাফি, টিকটক করা নিষেধ। এটি নেপালের প্রথম বিশ্বশান্তি প্যাগোডা
এবং নিপ্পনজান-মায়োহোজি দ্বারা নির্মিত বিশ্বের ৭০তম প্যাগোডা । প্যাগোডাটি ১১৫ ফুট
লম্বা এবং ৩৪৪ ফুট ব্যাস। সাদা প্যাগোডায় পর্যটক এবং ধর্মীয় দর্শনার্থীদের প্রদক্ষিণ
করার জন্য দুটি স্তর রয়েছে। এখানে ওঠা ও নামার একাধিক পথ রয়েছে। ফুলে ফুলে সজ্জিত
জায়গাটি মুগ্ধ করল আমাদের। মনে হলো অনেকদিন পর এক নিদারুণ নীরবতার মধ্যে চলে এসেছি।
ইতোমধ্যেই দুপুর দুটো বেজে গেছে। এবার
আমাদের নিয়ে যাওয়া হলো দুটো স্পটের সামনে। একটি হলো স্বচ্ছপানির নদী সেতি রিভার, অন্যটি
হলো গোরখা মেমোরিয়াল মিউজিয়াম। বলা হলো যে কোনো একটা দেখে লাঞ্চ করে আবার বাসে যেতে
হবে। আমরা নদীটাই দেখার সিদ্ধান্ত নিলাম। টিকেট করে প্রবেশ করলাম, কিন্তু হতাশ হলাম।
নদীটার সৌন্দর্য একটুও আকৃষ্ট করতে পারেনি। এটাকে ভালো কোনো স্পটই মনে হলো না। তবু
কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে আমরা চলে এলাম বাইরে। এখানে একটা রেস্টুরেন্ট আছে। নাম দ্বীপ গার্ডেন
রেস্টুরেন্ট। বেশ সুন্দর, পরিপাটি রেস্টুরেন্ট। ভেতরে, বারান্দায়, বাইরেও বসার ব্যবস্থা
আছে। আমরা ভেতরেই বসলাম। ছয়জনের জন্য তিনটা ভেজ থালি, তিনটা চিকেন থালি অর্ডার করলাম।
ভেজ ৩৫০ ও চিকেন ৪৫০ রুপি করে। খাবার বেশ ভালোই ছিল। খেয়েদেয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে
বাসের কাছে চলে গেলাম আবারও। গোরখা মেমোরিয়াল মিউজিয়ামটা দেখার আর সময় পেলাম না।
নান্দনিক পোখারা উপত্যকা; ছবিঃ লেখক
বিকেল হয়ে আসছে, পোখারায় আমাদের অভিযাত্রাও
চলছে। যত দেখছি, এই সাজানো-গোছানো নান্দনিক শহরটাকে দেখে অবাক হচ্ছি। কত সুন্দর করে
একটা শহর সাজানো যায় ভাবছিলাম শুধু। এরপর আমাদের নিয়ে যাওয়া হলো একটা গুহার সামনে।
আমরা সেটাতে প্রবেশ করলাম না। কারণ অলরেডি একটা গুহা দেখেছি। তারচেয়ে বাইরের পরিবেশটা
সুন্দর লাগছিল। বাইরে চা খেলাম সবাই। এরপর দেখি একজন মহিলা একটা সাদা ঘোড়া নিয়ে দাঁড়িয়ে
আছেন, রাইড দিয়ে থাকেন। আমি গিয়ে কথা বললাম। ১০০ রুপিতে একটা রাইড নিলাম। মূলত নেপালি
ঘোড়ায় চড়ার অভিজ্ঞতা নিতেই রাইডটা নিলাম।
আমাদের পরের গন্তব্য ছিল বৃন্দাবন টেম্পল
বা মন্দির। এটিও পাহাড়ের ওপরে নান্দনিক একটি মন্দির। এখানে ঢুকে দেখি পুণ্যার্থীরা
নানা ধরনের কার্যক্রমে ব্যস্ত। মন্দিরের সবকিছুই সাজানো-গোছানো। আমরা জুতো খুলে ওপরে
উঠলাম। মন্দরটি ঘুরে চলে এলাম নিচে, বাসের কাছে।
এবার আমাদের গন্তব্য ফেওয়া লেইক। পোখারার
সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা এই ফেওয়া লেইক। পোখারা গেলে ফেওয়া লেইকে না ঘুরলে পুরো জার্নিটাই
ব্যর্থ। আমাদেরকে শেষ বিকেলের দিকে বাস লেকের বোটিং পয়েন্টে নামিয়ে দিয়ে গেলো। এটাই
আজকে আমাদের শেষ স্পট। যা হোক, বোটিং পয়েন্টে গিয়ে বোট রিজার্ভ করতে হয়। এখানে দুই
ধরনের বোট পাওয়া যায়। একটা হলো রোয়িং নৌকা, যেটিতে সর্বোচ্চ চারজন বসা যায়। ভাড়া প্রতি
ঘন্টা ৮০০ টাকা। অন্যটা হলো প্যাডেল নৌকা, ৮ জন বসা যায়। ভাড়া ১৬০০ টাকা। আমরা ছয়জন
থাকায় প্যাডেল নৌকাই নিলাম। নৌকা আমাদের কাছে ভিড়তেই আমাদের লাইফ জ্যাকেট পরে নিতে
হলো। সাঁতার জানলেও এটা পরতে হয়। কারণ এটাই নিয়ম।
পাহাড়ের ভাজে চমৎকার হ্রদ; ছবিঃ লেখক
ফেওয়া লেক নেপালের পোখরা উপত্যকায়
অবস্থিত একটি স্বাদুপানির হ্রদ। সারাংকোট এবং কাসিকোট গ্রামের সন্নিকটে এই লেকের অবস্থান।
প্রাকৃতিক ঝর্না এই লেকের পানির উৎস হলেও বাধের মাধ্যমে পানি ধরে রাখা হয়, তাই এটি
পুরোপুরি প্রাকৃতিক লেক নয়। ফেওয়া লেক নেপালের দ্বিতীয় বৃহত্তম লেক। সমুদ্রপৃষ্ঠ
থেকে ৭৪২ মিটার উচ্চতায় এর অবস্থান। ফেওয়া লেকের আকার ৫.২৩ বর্গকিলোমিটার। এর গড়
গভীরতা ৮.৬ মিটার (২৮ ফুট) এবং সর্বোচ্চ গভীরতা ২৪ মিটার (৭৯ ফুট)। এই লেকের একটি দ্বীপে
তালবরাহী মন্দির রয়েছে।
পুরো বিকেলটা ফেওয়া লেকে কাটিয়ে গোধুলিবেলায়
ফিরে এলাম পাড়ে। নৌকা থেকে নেমে ক্লান্ত, শ্রান্ত শরীরে হেঁটে হেঁটেই চলে গেলাম আমাদের
হোটেলে। গিয়ে গোসল সেরে নিলাম। চা অর্ডার করে রুমে আনিয়ে নিলাম। শরীরটা সতেজ ও চাঙ্গা
করে বের হলাম রাতের পোখারা ঘুরে দেখতে। কিন্তু বের হওয়ার আগেই চলে এলো বৃষ্টি। ঝুমবৃষ্টি
থামল ঘন্টাদুয়েক পর। হোটেলের অভ্যর্থনাকক্ষের বারান্দায় বসে পোখারার রিমঝিম তালে ঝরতে
থাকা বৃষ্টি উপভোগ করলাম। একটু বৃষ্টি কমতেই বের হলাম। রাতের পোখারা দেখার প্ল্যান
মাটি ইতোমধ্যেই। এখন খাওয়ার জন্য ও কালকে কাঠমান্ডুযাত্রার বাসের টিকেট কাটা জরুরি।
আমরা টিকেট নিলাম একটা এজেন্সি থেকে। এরপর গতকালের রেস্টুরেন্ট গিয়ে খেলাম। সবকাজ শেষে
হোটেলে এসে যে যারমতো ঘুমের আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে গেলাম।
পোখারা মানেই ফেওয়া লেইক; ছবিঃ লেখক
৬ই অক্টোবর সকাল ৯টায় আমাদের বাস। পোখারায়
আরেকটি নান্দনিক সকাল দেখলাম। আজকে আকাশে ঝকঝকে রোদ। হোটেলের বারান্দা থেকে ফেওয়া লেক
ও পোখারার আকাশ অসাধারণ লাগছিল। আমরা আজও রুমেই নাশতা করে নিলাম। এরপর হোটেল থেকে চেকআউট
করে চলে গেলাম ট্যুরিস্ট বাস পার্ক, পোখারাতে। হেঁটেই যাওয়া যায়, ১০/১২ মিনিট লাগে।
গিয়ে দেখলাম আমাদের বাস রেডি। বাসে উঠে পড়লাম। সকালের পোখারা শহর দেখতে দেখতে আবারও
এগিয়ে চললাম কাঠমান্ডুর দিকে। মাঝে ২/৩বার বাস থামল। ১০ ঘন্টার জার্নি শেষে এবারও যথারীতি
সন্ধ্যা হয়ে গেলো। সাতটার দিকে পৌঁছলাম রাজধানীতে। কাঠমান্ডুতে নেমে আমাদের আগে থেকে
বুক করা ট্যুরিস্ট লজে চলে গেলাম। ছিমছাম নিরিবিলি পরিবেশে বিএনবি রয়্যাল টুরিস্ট হাউজে
গিয়ে চেকইন করে নিলাম। আমাদের চারজনের জন্য একটাই রুম নিয়েছিলাম। বড় রুম, চারটে সিঙ্গেল
বেড। নিরিবিলি ও নির্জন পরিবেশ। ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট করে আবারও বের হলাম। উদ্দেশ্য
রাতের কাঠমান্ডুর জনপ্রিয় এলাকা থামেল দেখা এবং ডিনার সেরে নেয়া। প্রথমে আমরা একটা
বাংলাদেশি হোটেলে গেলাম খেতে। নাম ‘কক্সবাজার রেস্টুরেন্ট’। একদম বাংলা খাবারের স্বাদ
পেলাম এখানে খেয়ে। এরপর থামেলে বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করলাম। রাতের জমজমাট থামেলে কী
না হয়! বার, স্পা, নাইট লাইফ সবকিছুর প্যাকেজ হলো থামেল। সাথে শপিং তো আছেই। ১১টার
পরে রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম। কাল আমাদের কাঠমান্ডু সিটি ট্যুর দেয়ার কথা। দেখা যাক সকালে
কখন বের হতে পারি!
ক্রমশ... (৩য় পর্বে সমাপ্য)
0 মন্তব্যসমূহ