কল-রেডীঃ ইতিহাসের সাক্ষী এক জনপ্রিয় মাইক পরিসেবা



"শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে,
রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে
অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন।
তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরিতে উঠিল জল,
হৃদয়ে লাগিল দোলা,
জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার সকল দুয়ার খোলা।
কে রোধে তাঁহার বজ্রকণ্ঠ বাণী?
গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর কবিতাখানি :
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।"


"স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো" কবিতায় কবি নির্মলেন্দু গুণ এভাবেই সাতই মার্চের ভাষণকে বর্ণনা করেছেন। কিংবদন্তি লেখক ও চিন্তাবিদ আহমদ ছফা যেমন বলেছেন- "বাঙালির শ্রেষ্ঠ কাব্য বলাকা নয়, সোনার তরী নয়। বাঙালির শ্রেষ্ঠ কাব্য ‘আর দাবায়ে রাখতে পারবা না’।"

সাতই মার্চের ভাষণ নিয়ে আজকের লেখাটি নয়। সেই ঐতিহাসিক ভাষণটির মূল্য কতটা সেটা আমরা যেমন জানি, তেমনি জানে সারা পৃথিবীও। ইউনেস্কো যেমন এই ভাষণটিকে 'মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড' বা বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে। এই ভাষণটির জন্যই বিদেশি পত্রিকা বঙ্গবন্ধুকে 'রাজনীতির কবি' উপাধি দিয়েছে।

এত গুরুত্বপূর্ণ ভাষণটি একযোগে পুরো ঢাকা শহরে সেদিন শোনা যাচ্ছিল। ভাষণটি সবার কাছে পৌঁছে দিয়ে যারা এক ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছিল, তারাই হলো 'কল-রেডী' মাইক। চলুন দেখে নিই আমাদের ইতিহাসের সকল গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সাক্ষী এই মাইকটির বৃত্তান্ত।

একাত্তরের মার্চের শুরুতে বঙ্গবন্ধু যখন কল-রেডীর মালিকদের ডেকে মাইক লাগানোর নির্দেশ দেন, তখন সারা ঢাকা শহরে সামরিক-বেসামরিক বাহিনীগুলোর তীব্র নজরদারি চলছে। সেই নজর এড়িয়ে রাতের আঁধারে ত্রিশজন কর্মী সর্বত্র মাইক লাগিয়েছিলেন। রাতে মাইক লাগিয়ে কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হত, যাতে কারও নজরে না পড়ে। পুরো ঢাকা শহরে প্রায় ৩০০মাইক লাগানো হয়েছিল। এভাবে সাতই মার্চ ঘনিয়ে এলো, মাইক লাগানোও শেষ হলো। কিছু মাইক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মজুদও রাখা হলো, যাতে উপস্থিত সময়ে লাগানো যায়।

সাতই মার্চ কল-রেডীর মালিকরা একজন সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারসহ সশরীরে উপস্থিত থেকে পুরো সমাবেশ কভার করলেন। যান্ত্রিক কোনো ত্রুটি যাতে না হয় সেজন্য সার্বক্ষণিক দেখভাল করলেন। তিনটি মাইক্রোফোন রাখলেন ব্যাকআপ হিসেবে। স্বাধীনতার মহা-প্রত্যয় নিয়ে বঙ্গবন্ধু মঞ্চে এলেন আর দিয়ে গেলেন স্বাধীনতার সেই অমীয় বাণী। কঠিন দৃঢ়তায় উচ্চারণ করলেন, 'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।'

ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণের সাক্ষী কল-রেডী মাইক




আরেকটু অতীতে ফিরে যাই। ধর্মের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে দেশভাগ হলো। সংখ্যালঘু হওয়া সত্ত্বেও জন্মভূমি ছেড়ে কিছুতেই না যাওয়ার প্রতিজ্ঞায় পুরান ঢাকার দুই ভাই হরিপদ ঘোষ ও দয়াল ঘোষ থেকে গেলেন পূর্ব পাকিস্তানেই। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই নানা বৈষম্যের প্রতিবাদে পূর্বপাকিস্তানে দানা বাঁধতে থাকে আন্দোলন। ১৯৪৮ সালে দুই ভাই হরিপদ ও দয়াল পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের লক্ষ্মীবাজারে 'আরজু লাইট হাউস' নামক একটি লাইটিংয়ের দোকান দেন। সে দোকানে লাইটের পাশাপাশি গ্রামোফোনও ভাড়া দেয়া হতো। পুরান ঢাকায় লাইট ও মাইক সার্ভিস অপ্রতুল হওয়ায় দ্রুতই তাদের নাম ছড়িয়ে পড়ে, ব্যবসা জমে ওঠে। মিছিল-মিটিং, সমাবেশ, বিয়ে, অনুষ্ঠান সবকিছুতেই তাদের সেবা নিতে থাকে মানুষ। এভাবেই চলে আসে ১৯৫২সাল। ভাষা আন্দোলন শুরু হয় জোরেশোরে। সেখানেও তাদের উপস্থিতি জোরালো হয়। চাহিদা বেড়ে যেতে থাকে। ফলে ভারত থেকে আরও কয়েকটি মাইক নিয়ে আসেন তারা। তাতেও চাহিদা অনুযায়ী সেবা দিতে পারছিলেন না। হরিপদ ঘোষ মাইকের অনেক কাজই জানতেন, এসব ব্যাপারে দক্ষতা ছিল তার। তাই যন্ত্রপাতি কিনে এনে নিজেই কয়েকটি হ্যান্ডমাইক তৈরি করে নিলেন। একসময় তাইওয়ান, জাপান, চীন থেকে আনতে শুরু করেন আরও মাইক। তবে মাইকের মূল অংশ মানে ইউনিটই বেশি আনা শুরু করলেন। দোকানের কারিগরদের দিয়ে হরিপদ ঘোষ এরপর নিজেই তৈরি করিয়ে নিতেন হর্নসহ বাকি অংশ।

ভাষা আন্দোলনের পর রাজনৈতিক সভা, সমাবেশ, আন্দলন অনেক বেড়ে যায়। সঙ্গত কারণেই পাকিস্তানের শাসকদের প্রতি ক্রমেই ক্ষোভ জন্ম নিতে থাকে বাঙালিদের। হরিপদ ও দয়াল ঘোষ মাইকের নাম পরিবর্তন করার উদ্যোগ নেন। পাশেই ছিল জগন্নাথ কলেজ (এখন বিশ্ববিদ্যালয়)। সে কলেজের শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করেন নাম বাছাই করে দিতে, পুরস্কারও ঘোষণা করেন। সেখান থেকেই আসে নতুন নাম 'কল-রেডী'। যার অর্থ কল করলেই রেডি মানে ডাকলেই প্রস্তুত। শুরু হয় নবোদ্যমে যাত্রা।

একে একে বাঙালির প্রতিটি গণ-আন্দোলনের সাক্ষী হয়ে যায় কল-রেডী। ১৯৫৪ সালে কল-রেডীর কর্মী ছিল ২০ জন। সভা-সমাবেশগুলো খুবই সুনামের সঙ্গে সম্পন্ন করতেন হরিপদ ও দয়াল ঘোষ। মাঝেমধ্যে তাদের ছোট দুই ভাই গোপাল ঘোষ ও কানাই ঘোষও বিভিন্ন কাজে সাহায্য করতেন। ভাষা আন্দোলনের পর ৫৪'র নির্বাচন, ৬৬'র ছয় দফা, ৬৯'র গণ-অভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচন ও একাত্তরের সাতই মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণেরও সাক্ষী এই মাইক। পূর্ব পাকিস্তানের অনেক বাঘা বাঘা নেতাই তাদের মাইকে ভাষণ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়াও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকসহ আরও অনেক নেতার ঐতিহাসিক সব ভাষণেরই নীরব সাক্ষী কল-রেডী।

সাতই মার্চের ভাষণের মাইক্রোফোন আর স্ট্যান্ডগুলো তো আজও সংরক্ষিত হয়ে আছে 'কল-রেডীর' কার্যালয়ে। মূলত এসব কারণে তাদের প্রতি পাকিস্তানি বাহিনীরও অনেক ক্ষোভ ছিল। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তাদের দোকান পুড়িয়ে দেয়া, সাতই মার্চের ভাষণের পর সমাবেশস্থলে আগুন লাগিয়ে মাইকের অনেক যন্ত্রপাতির ক্ষতি করার চেষ্টা তারই প্রমাণ দেয়।

একাত্তরের পর তারা আবার নতুন করে ব্যবসা শুরু করেন। বাহাত্তরে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সমাবেশে আবারও ডাক পড়ে 'কল-রেডীর'। সাতই মার্চের ভাষণ যে মাইক্রোফোনের সামনে, যে মাইক-স্ট্যান্ডের মাধ্যমে দিয়েছিলেন, সেগুলোর সামনেই আবার স্বাধীনতার স্থপতি বক্তৃতা দিলেন, একটি স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে। সেই মাইক্রোফোন ও মাইক স্ট্যান্ড এরপর আর কোথাও ব্যবহার করেনি তারা, আজও রেখে দিয়েছে স্মৃতি হিসেবে। সে গল্পে পরে আসছি।

পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগের রাতেও কল-রেডীর মাইক লাগানো হচ্ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কারণ সেদিন সেখানেও জাতির পিতার ভাষণ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন দয়াল ঘোষরা এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের খবর জানলেন, মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল তাদের। কারণ বঙ্গবন্ধু তাদের অনেক ভালোবাসতেন, দারুণ সম্পর্কও ছিল। তারাও বঙ্গবন্ধুকে অকৃত্রিম শ্রদ্ধায় ভরিয়ে দিতেন সবসময়। পুরান ঢাকায় গেলে প্রায়ই কল-রেডীর অফিসে যেতেন। হরিপদ ঘোষকে বঙ্গবন্ধু 'পাগলা' বলে সম্বোধন করতেন বলে জানিয়েছেন তার ছেলে কল-রেডীর বর্তমান পরিচালক ত্রিনাথ ঘোষ সাগর।

স্বাধীনতার পরও অনেক খ্যাতিমান দেশি-বিদেশি মানুষ কল-রেডীর মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিয়েছেন। এরমধ্যে মধ্যে আছেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী, যিনি ১৯৭২ সালে ভাষণ দিয়েছিলেন। এরপর ১৯৯৬ সালে ফিলিস্তিনের অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাত এবং আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা কল-রেডীর মাইক্রোফোনে ভাষণ দেন। আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, থেকে শুরু করে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়িও কল-রেডীর মাইক্রোফোনের সামনে কথা বলেছেন। আমাদের অতি গর্বের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি সমাবর্তনেই মাইক সার্ভিস দেয় কল-রেডী। ১৯৮১ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি সভা-সমাবেশে মাইক সার্ভিস দিয়েছে এবং দিয়ে যাচ্ছে কল-রেডী।

এই মুহূর্তে কল-রেডী সময়ের সাথে আরও আধুনিক হয়ে মাইক পরিসেবা দিয়ে যাচ্ছে। তবে বর্তমানে আরও অনেক মাইক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান থাকায় তাদের আগের সেই আধিপত্য নেই। শুধু ঐতিহ্যের জন্যই প্রতিষ্ঠানটিকে টিকিয়ে রেখেছেন তারা। হরিপদ ঘোষের চার ছেলেই এখন কল-রেডী দেখভাল করছেন। এরমধ্যে ত্রিনাথ ঘোষ সাগর আছেন পরিচালক হিসেবে। তারাই এই ব্যবসার শেষ প্রজন্ম। তাদের পরের প্রজন্ম আর আগ্রহী নয় এই ব্যবসায়। দিনে দিনে ব্যবসাটার পরিধিও সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। যদিও মাইক ব্যবসায় কল-রেডী সারা দেশে এখনও জনপ্রিয় একটি নাম। বর্তমানে ৩৬, এইচকে দাস রোড, লক্ষ্মীবাজার, সূত্রাপুর থেকে ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে তারা।

দীর্ঘ বাহাত্তর বছর ধরে একটা মাইক পরিসেবা প্রতিষ্ঠান যে সেবাটি দিয়ে যাচ্ছে, যেভাবে কালের সাক্ষী হয়ে আছে, তাতে এখন যদি এটি বন্ধও হয়ে যায়, তবু ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে থাকবে কল-রেডীর নাম। কিন্তু একটা আফসোস অনেক বছর ধরেই লালিত করে যাচ্ছেন এর মালিকরা। সেটা হলো বঙ্গবন্ধু যে মাইক্রোফোন ও স্ট্যান্ডের সামনে দাঁড়িয়ে সাতই মার্চের ভাষণ দিয়ে জাতিকে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, সে মাইক্রোফোন আর স্ট্যান্ডগুলো শত ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যেও যক্ষের ধনের মত আগলে রেখেছেন তারা। হরিপদ ও দয়াল ঘোষ চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর কাছে ওগুলো হস্তান্তর করতে। বঙ্গবন্ধু-হত্যার পর সেই চাওয়া পূর্ণ হয়নি। এখন তাদের সন্তানরা চান সেগুলো বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে দিতে। সরকার থেকে যথাযথ সংরক্ষণের আশ্বাস পেলেই তারা সেগুলো হস্তান্তর করে দিতে চান। এজন্য ডাকের অপেক্ষাতেও আছেন তারা। মুজিববর্ষেই তারা সরকারের হাতে তুলে দিতে চান এই ঐতিহাসিক অমূল্য নিদর্শনগুলো।

ত্রিনাথ ঘোষ গণমাধ্যমে এটা নিয়ে আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য প্রতিবছর বিদেশি বন্ধুদের সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যে প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে বীর বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে, সারাবিশ্বের মানুষ বঙ্গবন্ধুর সেই কালজয়ী ভাষণ শুনতে পেরেছে সেই প্রতিষ্ঠানকে আজ পর্যন্ত কোনো প্রকার সম্মাননা দেওয়া হয়নি। টাকা দিয়ে কল-রেডীর সেদিনের সার্ভিসকে মূল্যায়ন করা সম্ভব না। এ জন্য দরকার স্বীকৃতি। আর সেই স্বীকৃতির অপেক্ষায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যার দিকেই এখনও চেয়ে আছি।’

একটি মাইক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানও যে একটি জাতির স্বপ্ন নির্মাণের কালিক সাক্ষী হতে পারে, যুগ থেকে যুগান্তরে বয়ে নিয়ে যেতে পারে ইতিহাসের দায়, তার জ্বলন্ত প্রমাণ কল-রেডী। হয়তো তাদের সেবাটা টাকার বিনিময়ে ছিল। কিন্তু সব জিনিষের তো মূল্য হয় না। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও যারা জাতির ইতিহাস বিনির্মাণে ভূমিকা রাখে তাদের যথাযথ মর্যাদা দেয়া রাষ্ট্র ও জাতির কর্তব্য। যুগ যুগ জিও কল-রেডী!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ