মার্চ মাসটা এলেই আমাদের চেতনার ভেতর এক তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। স্বাধীনতার তোলপাড়। রক্তের কণায় কণায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অণুরনন ঘটে। হৃদয়ের চারপাশে ছড়ায় উৎফুল্লতার বিচ্ছুরণ। সেই উৎফুল্লতা হৃদয় থেকে একসময় আকাশে-বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। বিপুল ভাবাবেগে সেই উৎফুল্লতা এক অদ্ভুত তরঙ্গমালার সৃষ্টি করে আর তা নবোদ্যমে আছড়ে পড়ে সমুদ্রের তীরে। পাহাড়ের কোল থেকে নেমে আসা ঝর্নারাজির আওয়াজেও তখন একটি শব্দই শুনতে পাই- স্বাধীনতা।
পাকিস্তানি জালিম শাসকদের দীর্ঘ চব্বিশ বছরের অপশাসনের পর নয়মাস রনাঙ্গণের সম্মুখযুদ্ধের শেষে আমরা অর্জন করি চির-আরাধ্য সেই স্বাধীনতা। কিন্তু আজ স্বাধীনতার চল্লিশ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও আমাদের মনে একটি প্রশ্ন বারবার এসে তিরের মতো বিদ্ধ হয়। সেটি হলো, আমরা কি প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করতে পারছি? যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল অনেক ত্যাগের বিনিময়ে, যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল সকল প্রকার নীতিহীনতার নাগপাশ ছিঁড়ে ফেলে, সেই স্বাধীনতা কেন বিপন্ন হয় এখনও? আজও কেন আমরা পাইনি প্রকৃত মুক্তি?
উত্তর খুঁজতে হলে বলতে হয় অনেক কিছু। প্রথমেই বলতে হবে এদেশের পচে যাওয়া রাজনীতির কথা। চল্লিশ বছর যারা আমাদের শাসন করেছেন তারাই মূলত আমাদের প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ থেকে বঞ্চিত করেছেন। কিন্তু আজ আমি রাজনীতিবিদদের সীমাহীন ব্যর্থতার ইতিহাস বলব না। আজকের লেখার বিষয়ও সেটা না। আজ বলব আমাদের কিছু মানসিক দৈন্যের কথা, দেশপ্রেমের আড়ালে আমাদের ভিতরে লুকিয়ে থাকা ভণ্ডামির কথা। মুখে দেশপ্রেমের বুলি রেখে আমরা আমাদের জন্মশত্রুকে ক্রিকেটে যেভাবে সমর্থন দিই, তার কিছু নমুনা আজ তুলে ধরব।
বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপ আর ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টিসহ প্রতিটি টুর্নামেন্টেই আমরা দেখি একশ্রেণীর বাঙালি তথা বাংলাদেশিরা পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে নিয়ে মারাত্মক উৎফুল্ল! তারা পাকিস্তানের খেলার দিন পাকিস্তানের পতাকা মুখে এঁকে মাঠে গিয়ে পাকিস্তানকে অবিরাম সমর্থন দিয়ে যায়। এ নিয়ে ভার্চুয়াল জগতে অনেক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে। আশি, নব্বই আর শূন্য দশকে জন্ম নেয়া অনেক অনেক নব্য রাজাকারের উৎপাত সহ্য করেছি প্রায় নীরবেই। যদিও ফেসবুকে এ নিয়ে কয়েকটা স্ট্যাটাস আর কিছু নব্য রাজাকারকে বন্ধু তালিকা থেকে রিমুভ করেছিলাম তখন। আমার মতো আরো অনেকেই তখন এরকম করেছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি, উলটো এসব নব্য রাজাকারদের সংখ্যা এখন অনেক বেড়ে গেছে!
বাংলাদেশে হওয়া পাকিস্তানের প্রতিটি সিরিজ কিংবা টুর্নামেন্টে আমরা অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করি কিছু পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত বাঙালিকে। যারা এমনিতে তো দেয়ই, নিজেদের দলের বিপক্ষে পর্যন্ত প্রতিপক্ষ পাকিস্তানকে সমর্থন দেয়! গালে, মুখে আঁকে একাত্তরে আমাদেরই ছুঁড়ে ফেলা চন্দ্রখচিত পাকিস্তানের পতাকা। সেই অভাবনীয় দৃশ্য দেখে লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যায় আমাদের। ঘৃণায় চোখমুখ রি রি করে ওঠে! সারারাত অসহ্য যন্ত্রণায় ঘুমুতে পারি না ঠিকমত সেদিন। শুধু ভাবতে থাকি আমি ঠিক দেখেছি তো, এরা কি সত্যিই আমাদের বাংলাদেশি ছিল! কিন্তু সত্য তো অস্বীকার করার উপায় নেই। সত্য সত্যই। দেখলাম আশি, নব্বই ও শূন্য দশকে জন্ম নেয়া কয়েকটি প্রজন্ম নিজের দেশের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে। যে প্রজন্ম দেশকে ভালোবাসা তো দূরের কথা, উলটো দেশবিরোধতায় লিপ্ত!
প্রশ্ন জাগে এরা কারা? এরা কি জামাত-শিবির? যদি জামায়াত-শিবির হয়, তাহলে আমার কোনো কথা নেই। কারণ যে দল মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী হওয়া সত্ত্বেও জিয়া সাহেবের বদান্যতায় রাজনীতি করার সুযোগ পেয়ে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকেও অস্বীকার করে, তাদের অনুসারীরা পাকিস্তানকে সমর্থন করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দেখলাম, না। ওই দেশবিরোধী প্রজন্মটা শুধু জামাতের নয়। জামায়াত-শিবির তো আছেই, সাথে অন্যান্য দলের অনুসারীরাও কম নয় এই প্রজন্মে!
এই প্রজন্মের কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তারা কেন পাকিস্তানকে সাপোর্ট করে? দেখলাম তারা অনেকগুলো যুক্তি (অপযুক্তি) নিজেদের পক্ষে জমা করে রেখেছে। আসুন তাদের কিছু যুক্তি দেখে নিই আর বুঝে নিই কেন ওগুলো খোঁড়া যুক্তি।
১. তারা প্রথমেই বলবে, আমি একজন মুসলিম। আর মুসলমান মুসলমান ভাই ভাই। তাই মুসলিম ভাই হিসেবে তাদের আমি সমর্থন দিই!
#এই যুক্তি একটা হাস্যকর যুক্তি! কারণ ক্রিকেট খেলাটার সাথে ইসলামের কোনোই সম্পর্ক নেই, কখনো ছিলও না। আজ যদি মার্কিনিরা পাকিস্তান আক্রমণ করে আর তখন মুসলিম হিসেবে পাকিস্তানিদের প্রতি এদেশের কোন মুসলিম সমবেদন জানান, তখন না হয় তর্কের খাতিরে মানা যাবে যে মুসলিম হিসেবে মুসলিম ভাইকে সমবেদনা জানানো যায়। কিন্তু ক্রিকেটে এই যুক্তি কখনোই সিদ্ধ হয় না! তাছাড়া যারা এই যুক্তি দেয় তাদেরই আবার দেখি ফুটবলে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা, রিয়াল মাদ্রিদ-বার্সেলোনার মত ‘ইহুদি-নাসারা’ দলকে সমর্থন দিতে। সৌদি আরব-আর্জেন্টিনা কিংবা ব্রাজিল-মিসরের ফুটবল ম্যাচের সময় মুসলিম অজুহাত দিয়ে পাকিস্তানকে সমর্থন করা একজনকেও দেখিনি সৌদি আরব কিংবা মিসরকে সমর্থন দিতে!
২. কেউ কেউ বলে, একাত্তরের ঘটনার জন্য তো আফ্রিদিরা দায়ি নয়, তাহলে তাদের সাপোর্ট করলে সমস্যা কী?
#এই যুক্তিটাও গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ এই পাকিস্তান দলটা একাত্তরের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরই উত্তরসূরী! এদের গায়ে ওই খুনি-ধর্ষকদের রক্তই প্রবাহিত হচ্ছে। তাই এদের সমর্থন দেয়াটা একজন দেশপ্রেমিক হিসেবে কখনোই যুক্তিযুক্ত হতে পারে না। আচ্ছা, আমরা কি জানি একাত্তরের আগে অবিভক্ত পাকিস্তানে শুধু বাঙালি হওয়ার অপরাধে জাতীয় ক্রিকেট দলে আমাদের সেরা ক্রিকেটারদেরও নেয়া হয়নি? আমরা কি জানি তৎকালীন পাকিস্তান দলে সুযোগ পাওয়া একমাত্র বাঙালি ক্রিকেটার রকিবুল হাসান ‘জয় বাংলা’ স্লোগান লেখা ব্যাট নিয়ে খেলতে নেমেছিলেন বলে একাত্তরে পাকবাহিনীর ভয়ে তাকেও পালিয়ে বেড়াতে হয়েছিল? ক্রিকেটার হওয়া সত্ত্বেও যেখানে রকিবুল হাসানেরও রেহাই মেলেনি পাকবাহিনীর হাত থেকে, সেখানে ওদের ক্রিকেটারদের সমর্থন দেয়া আমাদের পক্ষে কীভাবে সম্ভব?
শহিদ মুশতাক ও শহিদ জুয়েলের নাম শুনেছেন? দুজনেই ক্রিকেটার ছিলেন এবং শুধু বাঙালি হওয়ায় তৎকালীন পাকিস্তান দলে প্রতিভা ও সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও সুযোগ পাননি। একাত্তরের যুদ্ধে পাকবাহিনীর হাতে দুজনেই শহিদ হয়েছিলেন এবং তাদের নামে মিরপুর স্টেডিয়ামে দুটি স্ট্যান্ডের নামকরণও করা হয়েছে। ক্রিকেটার হওয়া সত্ত্বেও তাদের হত্যা করা থেকে বিরত থাকেনি জালিম পাকবাহিনী। এসব ইতিহাস জেনেও কতবড় দেশদ্রোহী হলে পাকিস্তানকে সমর্থন দেয়া যায়!
৩. অনেকেই বলেন, ক্রিকেট আর রাজনীতি আলাদা জিনিষ । এখানে রাজনীতি টেনে এনে কী লাভ?
#এই যুক্তিটাও খোঁড়া যুক্তি। কারণ আমরা দেখতে পাই শুধু রাজনৈতিক কারণেই ভারত-পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হয় না। এক দেশের খেলোয়াড় আরেক দেশে যায় না! ২০০৯ এর বিডিআর বিদ্রোহের সময় পূর্ণ নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেয়া সত্ত্বেও শুধু রাজনৈতিক কারণেই পাকিস্তান বাংলাদেশ সফরে আসেনি। এইতো কিছুদিন আগে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছিল। এই রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড অনেক ষড়যন্ত্র করেছে বাংলাদেশ থেকে এশিয়া কাপ ও ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টি সরিয়ে নিতে। আইসিসিতে সরাসরি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং এও বলেছে রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলে তারা বাংলাদেশে খেলতে আসবে না। পরে নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক দল পাঠিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত (বিষয়টা হাস্যকর। কারণ যাদের দেশে মসজিদে, জানাজার নামাজে, ইদের জামাতে এমনকি সেনাবাহিনীর ওপর বোমা হামলা হয় তারাই আসে আরেক দেশের নিরাপত্তা দেখতে!) হওয়ার পরই খেলতে এসেছে। তাছাড়া প্রতিটি দলই একেকটি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করে। আর রাষ্ট্র আর রাজনীতিকে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। তাই ক্রিকেট কেন, কোনো খেলাকেই কোনো দেশের পক্ষেই রাজনীতির বাইরে রাখা সম্ভব না।
৪. তারা আরেকটা যুক্তি দেয়- পাকিস্তান অনেক ভালো খেলে। আফ্রিদি-ইউনুস খানদের খেলা আমাদের ভালো লাগে, তাই সাপোর্ট করি।
#এই যুক্তিদাতাদের বলি- ধরুন, এক লোক তোমার বাবার সামনে তোমার বোনকে ধর্ষণ করল। সেই ধর্ষণকারী লোকটার ছেলে একসময় নামকরা একজন শিল্পী হলো। তুমি একজন সংগীতপ্রেমী হিসেবে ওই লোকটার ছেলেকে কি ভালো শিল্পী হিসেবে সমর্থন করবে? তখন যদি বলে আমি সমর্থন করব না। তাহলে আমি বলব, নিজের এক বোনের ধর্ষকের ছেলে এত ভালো শিল্পী, তুমিও একজন সংগীতপ্রেমী, অথচ তাকে সমর্থন দিলে না। কিন্তু ত্রিশ লক্ষ শহিদ আর দুই লক্ষ মা বোনের ইজ্জত যে পশুরা কেড়ে নিলো, তাদের উত্তরসূরীদের তুমি কীভাব সমর্থন দিতে পারলে?
৫. তাদের কেউ কেউ বলে, ওরা মাঠে যেমন ভালো খেলে, মাঠের বাইরে খুব শৃঙ্খলিত! সবাই জামাতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত একসাথে নামাজ আদায় করে। এটা আমার ভালো লাগে, তাই তাদের আমি সমর্থন দিই।
#এটা হলো অপযুক্তি! কারণ পাকিস্তানিদের স্বভাবই নিজের খারাপ কাজগুলো ঢাকার জন্য ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা। এটা তারা সাতচল্লিশের দেশভাগের পর থেকেই করে আসছে। ক্রিকেটাররাও তার ব্যতিক্রম নয়। যার প্রমাণ, পাকিস্তানিদের মধ্যে ম্যাচ গড়াপেটাকারী বেশি, ঘুষ লেনদেনকারীও বেশি। ক্রিকেটকে তারাই সবচেয়ে বেশি কলঙ্কিত করেছে। কখনো ম্যচ ফিক্সিং, কখনো বল ট্যাম্পারিং, কখনো ভারতে এসে নাইট ক্লাবে ফুর্তি করতে গিয়ে ধরা পড়ে, কখনো মেয়েদের অশ্লীল ম্যাসেজ পাঠিয়ে, কখনো মাদকসহ বিমানবন্দরে ধরা খেয়ে, কখনো ক্যারিবিয়ান দ্বীপে গাঁজা সেবনরত অবস্থায় ধরা খেয়ে, কখনো পিচ খুঁড়ে। এমন ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডের জন্য যারা এমনিতেই ঘৃণিত, তাদের সাথে আমাদের ধর্মের অন্যতম বিধান নামাজকে জড়িয়ে তাদের সমর্থন করাটা মস্তিষ্ক বিকৃতিরই লক্ষণ বলে মনে করি!
বেশ কিছুদিন আগে একজন সেক্টর কমান্ডারের একটা লেখা পত্রিকায় পড়েছিলাম। তিনি দুঃখ করে বলেছিলেন, ‘আমরা জীবনটাকে বাজি রেখে দেশটাকে স্বাধীন করেছিলাম, বিজয় পতাকা উড়িয়েছিলাম। অথচ আজ যখন দেখি আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা পাকিস্তানকে সমর্থন দেয়, পাকিস্তানের পতাকা গালে আঁকে, তখন দুঃখে বুকটা ভরে যায়’। (মূল লেখাটা একটু ভিন্ন হতে পারে। স্মৃতির ওপর ভরসা করে লেখা)
ইতিহাসবিদ মুনতাসির মামুন লিখেছিলেন ‘বঙ্গবন্ধু একটি অনিচ্ছুক জাতিকে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন’। মুনতাসির মামুনের কথাটা আসলেই সত্য। স্বাধীনতার মর্ম আসলে আমরা বুঝতেই পারিনি। মাত্র ৯মাসে আমরা স্বাধীনতা পেয়ে গিয়ে স্বাধীনতা যে কি তাই ভুলে গেছি। যদি আমরা ফিলিস্তিনিদের মতো যুগের পর যুগ স্বাধীনতার সংগ্রাম করতাম, প্রতিটি পরিবারের কেউ না কেউ সেই সংগ্রামে নির্যাতিত হতো, শহিদ হতো, ধর্ষিতা হতো তাহলে বোধহয় স্বাধীনতাটাকে উপলব্দি করতে পারতাম আমরা। তখন আমরা সেই জালেমদের সমর্থন দিতাম না যারা মাত্র ৯মাসেই আমাদের ৩০লক্ষ ভাই আর দু’লক্ষ বোনকে হত্যা ও ধর্ষণ করেছিল। মাগনা ও সহজে পাওয়া কোনো জিনিষের মূল্য কারো কাছে থাকে না। ঠিক এ কারণেই আশি, নব্বই ও শূন্য দশকে জন্ম নেয়া নব্য রাজাকারদের কাছেও নেই স্বাধীনতার মূল্য!
আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টের অনেককেই যেমন রিমুভ করেছি শুধু পাকিস্তানের সমর্থনে কথা বলার কারণে, তেমনি আমার বাস্তব জীবনে অনেক বন্ধুর সাথেও মনোমালিন্যের সম্পর্ক এই পাকিস্তানকে সমর্থন দেয়ার কারণে। আমি মনে করি দেশপ্রেমের ক্ষেত্রে কোনো আপস নেই, হতে পারে না।
অগ্নিঝরা মার্চ মাস চলছে, সেইসাথে বাংলাদেশে চলছে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। সেখানে খেলছে পাকিস্তান দলও। তাই পাকিস্তানকে মাঠে বর্জন আর পাকি সমর্থকদের সামাজিকভাবে বর্জন করে স্বাধীনতার চেতনার বিচ্ছুরণ ঘটানোর এখনই উপযুক্ত সময়। অন্ধ আবেগে নয়, যুক্তির মাপকাঠিতেও নয়, শুধু দেশপ্রেমের কারণেই আমাদের পাকিস্তানকে বর্জন করা উচিত। ঘৃণার থু থু ছিটানো উচিত তাদের শরীরে, যারা পাকিস্তানের সেই পরিত্যক্ত পতাকা আজও গালে, মুখে আঁকে, যারা 'মেরি মি আফ্রিদি' লেখা প্লে-কার্ড হাতে নিয়ে মাঠে যায়।
যারা একাত্তরের জঘন্য মানবতাবিরোধী ঘটনাগুলোর জন্য ক্ষমাটা পর্যন্ত আজও চাইল না, তাদের সমর্থন দেয়ার মতো স্পর্ধা আমার, আমাদের হয়নি। আপনার, আপনাদের হয়েছে কি?
0 মন্তব্যসমূহ